আব্দুল্লাহ আলমাহদি এর দেওয়াল

এই সদস্য তার দেওয়ালে নতুন পোষ্ট করার অনুমতি বাতিল করেছেন
গুনাহ প্রকাশ না করা চাই!

আলী বিন আবি তালিব রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন,
من أذنب ذنبا فستره الله عليه في الدنيا، فالله أكرم من أن يكشف ستره في الآخرة، ومن أذنب ذنبا فعوقب به في الدنيا، فالله تعالى أعدل من أن يثني عقوبته على عبده في الآخرة .
“কেউ গুনাহ করলে আল্লাহ যদি দুনিয়াতে তা গোপন রাখেন, আশা করি আখিরাতেও তিনি তা প্রকাশ করবেন না। যদি এ কারণে দুনিয়াতে শাস্তি দেন, আশা করি আখেরাতে দ্বিতীয়বার শাস্তি দিবেন না।” -রামাদানঃ সাওরাতুত তাগঈর-১৭৪
2 ঘন্টা পূর্বে করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
তাকওয়া-০৪

তাকওয়া মানে অন্তরে আল্লাহর ভয় লালন করা। আল্লাহর ভয়ে নেক কাজ করা এবং গোনাহের কাজ পরিহার করা।
লালন করা মানে পরিপালন করা। পরিপালন কখনো আপন অবস্থায় ছেড়ে রাখলে হয় না। পরিচর্যা করতে হয়, উন্নতির ফিকির করতে হয়। সবসময় খেয়াল রাখতে হয়, কোনো কিছু সেটার ক্ষতি করে কি না। খোরাক যোগাতে হয়, যেন উত্তরোত্তর তা বৃদ্ধি পায়।
.
একটি পাখি পালন করার জন্য খাঁচায় বন্দী করে যদি আপনি বে-খবর হয়ে যান, সেটি যেমন কয়েকদিন পর মৃত্যু বরণ করবে, তেমনি তাকওয়া অর্জন করার পর যদি সেটি থেকে আপনি গাফেল হয়ে যান, একসময তার মৃত্যু ঘটবে।
সুতরাং রমজানে যদি কিছুটা তাকওয়া অর্জিত হয়ে থাকে (কম-বেশ কিছু না কিছু সবার নিশ্চয়ই হয়েছে কোনো সন্দেহ নেই), এবার সেটার তারবিয়াহ ও প্রতিপালনের প্রতি দৃষ্টি দিন।
বারবার আল্লাহর আজমত ও মোহাব্বত এবং ভয় ও আশা অন্তরে জাগ্রত করার চেষ্টা করুন। মাঝে মধ্যেই নির্জনে বিষয়গুলো নিয়ে ভাবুন, হৃদয়কে একটু নাড়াচাড়া দেয়ার চেষ্টা করুন, চোখের পানি দিয়ে হৃদয়কে সিঞ্চিত করুন। হৃদয়টাকে বসন্তের প্রকৃতির মতো সজিব ও তরতাজা রাখার চেষ্টা করুন। অবশ্যই আপনার তাকওয়া আরো শক্তিশালী হবে, আরো বৃদ্ধি পাবে।
3 দিন পূর্বে করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
তাকওয়া: ৩
যুহদের হাকীকত ও স্বরূপ:
হযরত রাবিয়া বিন ফররুখ তামিমি রহ. (মৃত্যু: ১৩৬) কে জিজ্ঞেস করা হল,
ما رأس الزهد؟
যুহদের মূল কী?
তিনি বললেন,
جمع الأشياء من حلها ووضعها في حقها
“হালাল পথে অর্জন করা। যথাস্থানে ব্যয় করা।” -আয যুহহাদু মিআহ, সিদ্দিক মিনশাবি: 164
6 দিন পূর্বে করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
তাকওয়া: ২
তাকওয়া অর্জন কত সহজ!
ما أيسر الورع! إذا شككت في شيء تركته
“তাকওয়া কতই না সহজ! কোনো বিষয়ে আপনার সন্দেহ হলেই তা পরিহার করুন।” -হযরত হাসসান বিন আবু সিনান রহ. (মৃত্যুঃ ১৫১ হিঃ) -আয যুহহাদু মিআহ, সিদ্দিক মিনশাবি : 179
07 অক্টোবর করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
তাকওয়া: ১
তাকওয়ার হাকীকত ও স্বরূপ
قال عمر بن عبد العزيز : ليست التقوى قيامَ الليل، وصِيام النهار، والتخليطَ فيما بَيْنَ ذلك، ولكن التقوى أداءُ ما افترض الله، وترك ما
حرَّم الله، فإنْ كان مع ذلك عملٌ فهو خير إلى خير
“রাতভর ইবাদত করতে থাকা আর দিনভর রোযা রাখতে থাকার নাম তাকওয়া নয়; তাকওয়া হল, আল্লাহ যা ফরয করেছেন তা আদায় করা এবং যা হারাম করেছেন তা বর্জন করার নাম। এর সাথে যদি অন্যান্য আমলও থাকে তাহলে তো সোনায় সোহাগা।”         -ওমর বিন আব্দুল আযীয রাহিমাহুল্লাহ; দুরুসুন তারবাবিয়াহ মিনাল আহাদিসিন নাবাবিয়্যাহ, শাইখ খালিদ আল-হুসাইনান রাহিমাহুল্লাহ: 46
04 অক্টোবর করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
ফিলিস্তিন জিহাদ ও বাংলাদেশের জিহাদি আন্দোলন
.
জি*হা*দের প্রসঙ্গ আসলে অনেকেই আমাদের উপর হামলে পড়েন। আমাদেরকে জঙ্গি ট্যাগ দেন। তারা বলেন, জি*হা*দ জি*হা*দ!!! আমাদের কি আছে? আমরা কি দিয়ে জি*হা*দ করব?
আমরা বলি, আপনি শান্ত হোন, আপনার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি,
.
মনে করুন, আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে অক্ষম মানুষ। অন্যের পরিত্যাক্ত গোয়াল ঘরে বউ বাচ্চা নিয়ে রিফিউজি হয়ে বাস করেন। ঘুম থেকে উঠে সকালের খাবার জুটবে কি না জানেন না। বিপদে পড়লে আপনার ডাকে সাড়া দেয়ার মতো একটা কাক-পক্ষীও খুঁজে পাবেন না। এই হল আপনার অক্ষমতার চিত্র।
অপরদিকে (আল্লাহ না করুন) জাতিসংঘ, আমেরিকা, ন্যাটো কিংবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কোনো সুপার পাওয়ার আপনার উপর আক্রমণ চালিয়েছে। আপনার এক সন্তানকে ধর্ষণ করেছে। আরেক সন্তানকে তুলে নিয়ে গেছে। আপনার বাবাকে হত্যা করেছে। আপনার মাকে আহত করেছে। স্ত্রীকেও তুলে নিয়েছে।
.
আপনি আমাকে বলুন, আজ যেহেতু বউ বাচ্চার খাবার জোগাড়ের পেরেশানি নেই, আবার এত বড় শত্রুর মোকাবেলায় আপনার কিছু করার শক্তি সামর্থ্যও নেই, তো আপনি যদি এতদিন ৬ঘণ্টা ঘুমান, আজ কি দায়িত্ব নেই বলে ৮ঘণ্টা ঘুমাবেন? না আপনার ঘুম কমবে? নিশ্চয় সামর্থ্য না থাকলেও স্ত্রী সন্তানকে উদ্ধারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরবেন, দৌড়ঝাপ করবেন।
নিশ্চয়ই আপনি ইতোমধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন !
.
হ্যাঁ, আমরা এটাই বলছি। ইসলাম আপনার বোন আর আমার বোনের মাঝে পার্থক্য করে না। আজ সারা বিশ্বে আপনার আমার কত অজস্র মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত প্রতি মুহূর্তে। আপনার কিছু করার সামর্থ্য নেই বুঝলাম, কিন্তু আপনার ঘুমের ঘোরেও কি একটু ব্যাঘাত ঘটাতে পারছে তাদের আর্তচিৎকার?
.
আমরা বলি না, অপরিণামদর্শীর মতো খালি হাতে অস্ত্রধারী শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। আমরা বলি একটু চিন্তা করুন, নিজের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করুন। তাদের জন্য কিছু করার সামর্থ্য আছে কি না, খুঁজে দেখুন। যতটুকু আছে ততটুকু ব্যবহার করুন। বাকিটা অর্জনের চেষ্টা করুন।
.
তাদের উদ্ধার করতে পেরেছি কি না, এই প্রশ্নের উত্তর আপনাকে দিতে হবে না। তবে আপনার সামর্থ্যে যা ছিল, সে অনুযায়ী চেষ্টা করেছেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তর কাল কেয়ামতের ময়দানে অবশ্যই দিতে হবে।
সম্প্রতি ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বরতা শুরু হবার পর, এই ফতোয়া উলামায়ে কেরাম সকলেই দিচ্ছেন যে, এখন সমগ্র বিশ্বের সকল মুসলিমের উপর সাধ্য অনুযায়ী জি*হা*দে শরীক হওয়া ফরজ, যে ফতোয়া মুজাহিদ উলামায়ে কেরাম বহু আগে থেকে দিয়ে আসছেন।
.
বস্তুত ফিলিস্তিন জি*হা*দে শরীক হওয়া যে ফতোয়ায় ফরজ, একই ফতোয়ায় বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সকল জি*হা*দি আন্দোলনে শরীক হওয়াও সাধ্য অনুযায়ী সকলের উপর ফরজ। চাই সেখানে কিতাল চলমান থাকুক বা না থাকুক। সবগুলো জি*হা*দেরই কারণ ও লক্ষ্য এক ও অভিন্ন। সর্বত্রই ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ শত্রু দ্বারা আক্রান্ত। সবারই লক্ষ্য আক্রান্ত মুসলিম ও মুসলিমদের ভূমিগুলো পুনরুদ্ধার করা।
.
কিন্তু সকল আলেমের ঐক্যবদ্ধ ফতোয়ার পরও অনেককে অহেতুক নানা সংশয় ও প্রশ্নে ঘুরপাক খেতে দেখছি। যেমন:
* আমাদের কিছুই করার নেই, কারণ আমাদের কোনো সামর্থ্য নেই।
* আমরা কি করব? আমরা তো আর সেখানে যেতে পারব না।
* ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করার সামর্থ্য তো আমাদের নেই।
* আমাদের সরকারই তো আমাদের কিছু করার অনুমতি দিবে না।
* সরকারের অনুমতি ছাড়া কিছু করা ঠিক হবে না।
* সরকারের বাধা উপেক্ষা করে তো আমরা কিছু করতে পারব না।
ইত্যাকার নানান সংশয়ের মুখে পড়ে আমরা আমাদের ফরজ দায়িত্ব থেকে নিষ্ক্রিয় থাকছি, আর আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত আব্রু ও নিষ্পাপ শিশু সন্তানদের জীবন-মরণ শত্রুর করুণার উপর ছেড়ে দিচ্ছি।
.
অথচ একটু চোখ কান খুলে ডানে-বামে তাকালে আমার বর্তমান সক্ষমতার ভেতরই দায়িত্ব আদায়ের অসংখ্য কাজ আমি খুঁজে পেতে পারি, যা একদিকে যেমন আমাকে মহাপরাক্রমের বিচারের কাঠগড়া থেকে মুক্তি দিতে পারে, অপরদিকে আমার নির্যাতিত মুসলিম ভাই বোন ও নারী শিশুদেরও শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
.
এসব প্রশ্নের উত্তর কী, এসব সংশয়ের সমাধান কী, আমার সক্ষমতা কোথায়, কীভাবে আমি জি*হা*দের ফরজ দায় থেকে মুক্ত হতে পারি, কিভাবে হাজার কিলোমিটার দূর থেকেও মাজলুমের পাশে দাঁড়াতে পারি, এসব প্রশ্নের উত্তরের জন্য পড়ুন

“ফিলিস্তিন জি*হা*দ।। উলামায়ে কেরামের ফতোয়া ও মূল্যায়ন: একটি বিশ্লেষণ”   

লিংক https://fatwaa.org/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7/%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%86%e0%a6%95%e0%a6%b8%e0%a6%be-%e0%a6%89%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%87/
03 অক্টোবর করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
উলামায়ে কেরামের সঙ্গে মুজাহিদদের সম্পর্ক

শায়খ মুসান্না হাসসান হাফিযাহুল্লাহ বলেন,

"এ যুগে কারা উলামায়ে হক আর কারা উলামায়ে ‍সূ-এর স্তরে অধঃপতিত এবং কোন সে আমল যা এ বিষয়টি পরখ করার কষ্টিপাথররূপে বিবেচ্য এবং আজকের মুসলমান কোন জায়গাটায় বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির শিকার!
…৩. মুসলিম জনপদগুলোতে অসংখ্য উলামায়ে কেরাম এমন আছেন, যাঁদের ইলম ও জ্ঞান সর্বসাধারণের কাছে সুবিদিত, সমাদৃত। দীনের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক, তাঁদের দীনি খিদমাত সবার কাছে স্বীকৃত এবং তাঁদের পুরো যিন্দেগি নেক আমল দ্বারা সুসজ্জিত। তাঁদের জীবন ইলমে দীন অর্জনে এবং তার প্রচার প্রসারে অতিবাহিত হয়েছে। তাঁদের অবদান, কর্ম ও কীর্তি সন্দেহাতীত। এত কিছু সত্ত্বেও মুসলিম ভূখণ্ডগুলোতে শরীয়াহ বাস্তবায়নের জন্য সশস্ত্র চেষ্টা-প্রচেষ্টার তাঁরা বিরোধী। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ইসলামী রাষ্ট্র বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন এবং মু*জা*হি*দদের বিরুদ্ধে স্থানীয় শাসকদের পদক্ষেপগুলোতে সহযোগিতা করেন।  শাসক নিজ স্বার্থে এই সকল উলামা হযরতের দস্তখত নিয়ে সম্মিলিত ফতোয়া প্রকাশ করে অথবা বয়ান লিখিয়ে নেয়।
এ সকল উলামায়ে কেরাম (সামগ্রিকভাবে) হকপন্থী, কেবল এই অবস্থানে এসে তাঁরা ভুল করে ফেলেন। এটা তাদের ভুল এবং পদস্খলন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তো যবরদস্তি ও চাপের মুখে পড়ে এই অবস্থান গ্রহণ করতে বাধ্য হন। আর কেউ কেউ এমন আছেন, যাদের কাছে নিজেদের অবস্থানের পক্ষে দলীল রয়েছে। তারা মনে করেন, সশস্ত্র চেষ্টা-প্রচেষ্টায় সফলতার সম্ভাবনা কম, আমাদের যথাযোগ্য সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই। অথবা তাদের দৃষ্টিতে সশস্ত্র চেষ্টা-প্রচেষ্টার পরিণতিতে আরও বড় ক্ষতি ও বিপদের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথবা তারা মু*জা*হি*দীনের ভুল পদক্ষেপগুলোর কারণে শঙ্কিত কিংবা সমকালীন পশ্চিমা জীবনব্যবস্থার ইসলামাইজেশনের পক্ষে দলীল প্রমাণ দাঁড় করান।
কোনো সন্দেহ নেই, সে দলীলগুলোর একটাও সহীহ নয়; তাদের এই অবস্থান একটা বড় ভুল; যাতে তারা লিপ্ত হয়ে আছেন। কোথায় ধর্মহীন শাসক, তাদের দীন-দুশমনি আর ধর্মহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা, আর কোথায় নেফাযে শরীয়তের পবিত্র তাকবীর ধ্বনি ও সে তাকবীরের ঝাণ্ডাবাহী সিপাহিদের ত্যাগ ও কুরবানী! এদের মধ্যে কোন পক্ষের সমর্থন ও পক্ষাবলম্বন করা হবে তা তো খুবই স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন।
কিন্তু (মনে রাখতে হবে) এই ভুলগুলো সত্ত্বেও তাঁদেরকে উলামায়ে সূ’-এর কাতারে ফেলা তাঁদের কৃত ভুলের চেয়েও বড় না-ইনসাফি। আর তাঁদের সঙ্গে উলামায়ে সূ’-এর মতো আচরণ করাও কিছুতেই দীনের শিক্ষা নয়। তাঁদের নিয়তের উপর সন্দেহ করা, তাঁদেরকে ধর্মহীন শাসকদের ক্রীড়নক মনে করা, মু*জা*হি*দীনের দুশমন মনে করা, তাঁদের অসম্মান করা, গীবত করা কোনোটিই জায়েয নয়। তাঁদের ভুল আপন জায়গায়। এ ভুলের উপর উলামায়ে হকের পক্ষ থেকে অস্বীকৃতি ও নিন্দা জ্ঞাপন অবশ্যই হওয়া উচিত। তবে তাঁদের সম্মান ও মর্যাদাও মুসলমানদের মধ্যে অক্ষুণ্ন রাখতে হবে এবং এমন কোনো আচরণ ও আন্দায গ্রহণ করা যাবে না, যার কারণে তাঁদের সম্মান ও মর্যাদা সমাজের সামনে ক্ষুণ্ন হয়ে যায় এবং তাঁদের দীনি অবস্থান নিঃশেষ হয়ে যায়।
এমন আলেমদের ব্যাপারে পূর্ণ আস্থার সঙ্গে বলা যায়, তাঁরা ইসলাম এবং ইসলামের বিজয়ের প্রতি আন্তরিক এবং মু*জা*হি*দদের ‍তাঁরা মুহব্বত করেন। তবে তাঁদের ইজতেহাদ তাঁদেরকে এমন অবস্থান গ্রহণে বাধ্য করেছে।” -উলামা সে মুতাআল্লেক তারযে তাআমুল: ইতেদাল কি রাহ: ৭৪-৭৭
.
শায়খের এই কিতাবটি বিশেষ করে দাঈ ও দায়িত্বশীলদের সকলের পড়া দরকার। এখানে আহলে হক আলেম হিসেবে শায়খ যাঁদের চিহ্নিত করেছেন, তাঁদের বিষয়টা আমাদের স্বতন্ত্রভাবে ফিকির করা জরুরি। ভুল ইজাতিহাদের ভিত্তিতে দীনের জন্য মুখলিস ও ফিদা আলেমদের জি*হা*দ বিরোধিতাকে উলামায়ে সূ’দের থেকে আলাদা মূল্যায়ন করা জরুরি। তাঁদের সঙ্গে কল্যাণকামিতা, সহমর্মিতা ও নম্রতার আচরণ করা জরুরি। তাঁদের অন্তরের বিষয়ে আক্রমণ করা মারাত্মক বিভ্রান্তি।
চিন্তা করা দরকার, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ দয়া ও করুণায় আমাদের মতো যাদের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করে জি*হা*দের সমঝ দান করেছেন এবং মু*জা*হি*দদের জামাতভুক্ত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, আমাদেরও কারো কারো অবস্থা কিছুদিন আগে এমন ছিল। মু*জা*হি*দদের আমরা ভুল বুঝতাম। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই দয়া করে আমাদের বুঝ দান করেছেন। সুতরাং এখন যারা আমাদের বুঝতে ভুল করছেন, তাঁদের প্রতিও আমাদের কল্যাণকামী ও বিনয়ী হয়ে হেকমতের সঙ্গে কাজ করা জরুরি, যাতে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়।
কোনো কোনো দাঈ; এমনকি কতিপয় আলেম দাঈ ভাইও এখানে বিভিন্ন ভুলভ্রান্তির শিকার হন এবং তাদের থেকে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ ও উচ্চারণ প্রকাশিত হয়, যা আলেমদের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব তৈরি করে। অবশ্য এটা অনেকটাই পরিষ্কার যে, যারা গ্রহণযোগ্য কোনো জি*হা*দি তানজীমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন এবং তাদের তারবিয়াহ গ্রহণ করেন, তাদের তুলনায় এমন দাঈদের থেকেই এমন ভ্রান্তি বেশি প্রকাশ পায়, যারা ব্যক্তিগতভাবে কাজ করেন এবং গ্রহণযোগ্য কোনো জি*হা*দি তানজীমের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন না বা হন না। কখনো কখনো অবস্থা এতই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে, যেখানে বলা যায় الدين محجوب بأهله (দীনের অনুসারী দ্বারাই দীন বাধাগ্রস্ত) মাআযাল্লাহ।
আশা করি, জি*হা*দি আন্দোলনের সকল দাঈ ও কর্মী ভাই বিষয়টি আত্মস্থ করার চেষ্টা করবেন, যদি আপনি জি*হা*দকে ভালোবাসেন; চাই আপনি কোনো জি*হা*দি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হোন বা না হোন।
যে বিন্দুগুলোতে অসতর্কতার কারণে আলেমদের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব তৈরি হয়, আল্লাহ তাওফীক দিলে সামনে এমন কিছু বিন্দু ভাইদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

পুরো আর্টিকেলঃ https://fatwaa.org/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7/%e0%a6%89%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a7%87-%e0%a6%ae/
25 সেপ্টেম্বর করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
ইলম ও জিহাদ: দুটি অবিচ্ছেদ্য জমজ!

শরীয়তের দুটি দিক। দার্শনিক ও প্রায়োগিক। সহীহ ইলম শরীয়তের দর্শনকে সংরক্ষণ করে, আর সহীহ জি’হা’দ শরীয়তের প্রয়োগকে নিশ্চিত করে। দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ইলম ও জি’হা’দ এমন দুটি জমজ, যা কখনো বিচ্ছিন্ন হতে পারে না। বিচ্ছিন্ন হলে দুটিই কার্যক্ষমতা হারায় এবং বিপথগামী হয়। একারণেই আল্লাহ তায়ালা রাসূল প্রেরণের সঙ্গে যেমন কিতাব নাযিল করেছেন, তেমনি জি’হা’দ ও কি’তা’লের জন্য ‘হাদীদ’ (লোহা)ও নাযিল করেছেন।
.
{لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَأَنْزَلْنَا مَعَهُمُ الْكِتَابَ وَالْمِيزَانَ لِيَقُومَ النَّاسُ بِالْقِسْطِ وَأَنْزَلْنَا الْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ وَرُسُلَهُ بِالْغَيْبِ إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ } [الحديد: 25]
“নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদণ্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি আরো নাযিল করেছি লোহা, তাতে প্রচণ্ড শক্তি ও মানুষের জন্য বহু কল্যাণ রয়েছে। আর যাতে আল্লাহ জেনে নিতে পারেন, কে না দেখেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। অবশ্যই আল্লাহ মহাশক্তিধর, মহাপরাক্রমশালী।” –সূরা হাদীদ: ২৫
.
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
وأما العلم بالكتاب والحكمة ..... فالجهاد سنام الدين وفرعه وتمامه، وهذا أصله وأساسه وعموده. -مجموع الفتاوى: 15/ 390
“.... জি’হা’দ হলো দ্বীনের চূড়া ও পূর্ণতা, আর ইলম হলো দ্বীনের ভিত্তি ও স্তম্ভ।” -মাজমুউল ফাতাওয়া: ১৫/৩৯০
.
আল্লামা ইবনে আবেদীন শামি রহ. বলেন,
فإن قيام الدين بالجهاد والعلم -الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (6/ 403)
“শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা লাভ করে জি’হা’দ ও ইলমের মাধ্যমে।”
দুঃখজনক সত্য হলো, আজ আমরা দুটিকে আলাদা করে ফেলেছি। অনেককে তো দুটিকে বিপরীতমুখী ও সংঘর্ষিকরূপে দাঁড় করাতেও দেখা যায়!
21 সেপ্টেম্বর করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
জুমআর সময় যে নাজায়েয কাজটি অনেকেই করি!
অধিকাংশ মসজিদেই জুমআর সময় একটি নাজায়েয কাজ হয় এবং আমরা সকলেই তা করি, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। অথচ মুহতারাম খতীব সাহেবগণ সামান্য দৃষ্টি দিলেই হাজার হাজার মানুষ নাজায়েয কাজটি থেকে বাঁচতে পারেন অনায়াসে।
আমরা জানি, খুতবা চলাকালে অন্য সকল কাজ নাজায়েয। সব কাজ বন্ধ করে খুতবা শ্রবণে মনোযোগী হওয়া ওয়াজিব। অথচ অনেক মসজিদেই দেখা যায়, খুতবা শুরুর প্রাক্কালে মসজিদের দানবাক্সগুলো চালু করা হয়, যা চলতে থাকে খুতবা শুরুরও বেশ কিছুক্ষণ পর্যন্ত। খতীব সাহেব ইচ্ছা করলে, দানবাক্স কাতারের শেষ মাথায় পৌঁছা পর্যন্ত দুই চার মিনিট অপেক্ষা করে খুতবা শুরু করতে পারেন। এতে কয়েক মিনিট সময় গেলেও হাজারো মানুষ একটি নাজায়েয কাজ থেকে বাঁচতে পারেন।
আমরা সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিষয়টির প্রতি খতীব সাহেবদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারি
13 সেপ্টেম্বর করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
হক্কানী আলেম ও সত্যের পথিক মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ একটি নিদর্শন
.
আমাদের অনেকের ধারণা, যিনি নিজে ভালো হবেন, তাকে সবাই ভালো বলবে এবং তিনি সবার প্রিয় হবেন। একইভাবে আমরা মুমিন, কাফির, মুরতাদ ফাসিক, ফাজির নির্বিশেষে সকলের কাছে সমাদৃত হওয়াকে অনেক সময় বড় ব্যক্তির বুজুর্গ হওয়ার প্রমাণ বা নিদর্শন হিসেবে পেশ করি। শোনা যায় তিনি এত বড় বুজুর্গ যার কোনো শত্রু নেই। যাকে সবাই সমীহ করে। কিন্তু বস্তুত এটি গোমরাহির নিদর্শন।
.
হক্কানী, বুজুর্গ ও সত্যবাদীর নিদর্শন হল, তাকে পৃথিবীর খারাপ মানুষগুলো খারাপ বলবে এবং বেশি কষ্ট দিবে।
.
একারণেই আমরা দেখি আমাদের প্রিয় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে পৃথিবীর সর্বকালে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, অথচ তাঁকেই এই পৃথিবীর বুকে সর্বাধিক কষ্ট দেয়া হয়েছে। খোদ রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
ما أوذي أحد مثل ما أوذيت في الله. كنز العمال، طبع مؤسسة الرسالة، ج:3، ص: 247
“আল্লাহর পথে আমাকে যত কষ্ট দেয়া হয়েছে, দ্বিতীয় কাউকে এত কষ্ট দেয়া হয়নি।” -কানযুল উম্মাল, খ. ৩, পৃ. ২৪৭
.
সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা. থেকে একটি বর্ণনায় এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
أشد الناس بلاء الأنبياء ثم العلماء ثم الأمثل فالأمثل. المستدرك للحاكم، برقم: 5463
“সর্বাধিক কঠিন বালা মসিবতের শিকার আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম। তারপর উলামাযে কেরাম, তারপর যে তাঁদের আদর্শের যত নিকটে সে।” -মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং ৫৪৬৩
.
এ কারনেই সুফিয়ান ছাওরী রহ. (মৃত্যু: ১৬১ হি.) বলেন-
إِذَا أَثْنَى عَلَى الرَّجُلِ جِيْرَانُهُ أَجْمَعُوْنَ، فَهُوَ رَجُلُ سُوءٍ، لأَنَّهُ رُبَّمَا رَآهُم يَعصُوْنَ، فَلاَ يُنْكِرُ، وَيَلقَاهُم بِبِشْرٍ. -سير أعلام النبلاء، ج: 7، ص: 278، طبع مؤسسة الرسالة الثالثة: 1405هـ.
“যখন কারো প্রতিবেশীরা সকলেই তার প্রশংসা করে, বুঝতে হবে লোকটি ভালো নয়। কারণ তার মানে দাঁড়ায় সে তাদেরকে অনেক সময় অন্যায় করতে দেখেও তাতে বাধা দেয়নি, বরং তার সঙ্গে হাসি খুশি আচরণ করেছে।”
তিনি আরো বলেন-
إِذَا رَأَيتَ الرَّجُلَ مُحَبَّباً إِلَى جِيْرَانِهِ، فَاعْلَمْ أَنَّهُ مُدَاهِنٌ. -سير أعلام النبلاء، ج: 7، ص: 278، طبع مؤسسة الرسالة الثالثة: 1405هـ.
“যখন তুমি কাউকে দেখবে সে তার প্রতিবেশীদের সকলে প্রিয় পাত্র, বুঝে নিবে- সে শরীয়তের বিষয়ে অবহেলা ও শিথিলতা প্রদর্শনকারী।” -সিয়ারু আ’লামিন নুবালা, খ. ৭, পৃ. ২৭৮
17 অগাস্ট করেছেন আব্দুল্লাহ আলমাহদি
নির্বিক এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে আপনি আপনার প্রশ্ন করে উত্তর জেনে নিতে পারবেন এবং পাশাপাশি অন্য কারো প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলে তাদের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করতে পারবেন।
...