84 বার প্রদর্শিত
"বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি" বিভাগে করেছেন Level 7

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন Level 7
অ্যান্টনি ল্যাভয়সিয়ে ছিলেন একজন ফরাসি বিজ্ঞানী।১৭৪৩ সালের ২৬ আগস্ট এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রসায়নের এই কিংবদন্তি। তার পিতা ছিলেন ফরাসী পার্লামেন্টের অ্যাটর্নি।পিতার ইচ্ছা ছিল পুত্রও বড় হয়ে তার মতো নাম করা আইনজীবী হবেন। আর এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এগারো বছর বয়সে তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়। কিন্তু তার পিতার আশা দিন দিনে ফ্যাকাসে হতে থাকে।কারণ অন্য সব বিষয়ের মধ্যে বিজ্ঞানই ল্যাভয়সিয়েকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করত। আইন বা অন্য কোনো বিষয়ের উপর তেমন একটা আগ্রহ ছিল না তার।স্কুল জীবন শেষ করে কলেজে ভর্তি হলেন ল্যাভয়সিয়ে।সেখানে তার শিক্ষক ছিলেন প্রখ্যাত অঙ্কবিদ ও জ্যোতির্বিদ নিকোলাস লুইস।এসময় পিতার ইচ্ছা অনুসারে লাভয়সিয়ে আইনের ক্লাসে ভর্তি হলেন। আইনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও আইনের প্রতি তার সামান্যতম আকর্ষণ ছিল না।দিনরাতের অধিকাংশ সময় তার কাটত বিজ্ঞানচর্চায়। বাড়িতেই ছোট একটি গবেষণাগার গড়ে তুলেছিলেন তিনি।১৭৬৪ সালে তিনি ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমীতে প্রথম তার বিজ্ঞান বিষয়ক রচনা পেশ করেন। তাতে মৌলিক কোনো তথ্য না থাকলেও তার তার এ প্রচেষ্টার সকলেই প্রশংসা করেন । পরের বছর ফরাসি এ্যাকাডেমীর পক্ষ থেকে বিজ্ঞান বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হল।সেই প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করলেন ল্যাভয়সিয়ে। অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষের সঙ্গে পরিচয় হল তার। এদের মধ্যে ছিলেন ভূতত্ত্ববিদ জিন গুটার্ড। তিনি সেসময় ফরাসি দেশের ভূতত্ত্ব বিষয়ক মানচিত্র তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন।ল্যাভয়সিয়েও ১৭৬৭ সালে মানচিত্র তৈরির কাজে বেরিয়ে পড়লেন সঙ্গে মাত্র পঞ্চাশ লুইস নিয়ে।তার সঙ্গে ছিল একটি ঘোড়া, চাকর জোসেফ আর প্রৌঢ় বিজ্ঞানী ওটার্ড।কয়েক মাস পর্যবেক্ষণের প্যারিসে ফিরে আবেদন করলেন ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমিতে সদস্য হওয়ারর জন্য। সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবেই একদিন তিনি জানতে পারলেন তাকে বিজ্ঞান এ্যাকাডেমির সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে তিনি এ কৃতিত্ব অর্জন করেন।একজন তরুণের পক্ষে এটা ছিল অকল্পনীয় সাফল্য। তার গবেষণার বিষয় ছিল যেমন বিচিত্র তেমনি ব্যাপক। জীবদেহের উপর চুম্বকত্বের প্রভাব, অভিকর্ষ পানি সরবরাহ, রঙের তত্ত্ব, বাঁধাকপির বীজ থেকে তেল নিষ্কাশন, চিনি তৈরি, কয়লা থেকে পিচ তৈরি ইত্যাদি।তিনি একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হলেন। প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল 'ফেরম'।ল্যাভোয়সিয়ে বুঝতে পারছিলেন গবেষণার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তাই তিনি অর্থ উপার্জনের জন্য চাকুরি নিলেন।ফেরমে দু’বছর চাকুরির পর ল্যাভয়সিয়ে তার এক উচ্চপদস্থ মনিবের সুনজরে পড়ে যান।তার একমাত্র মেয়ে মেরি এ্যার্নির সঙ্গে ল্যাভয়সিয়ের বিবাহ দিলেন। মেরি তখন মাত্র চৌদ্দ বছরের বালিকা। পরবর্তী জীবনে এই মেরি-ই হয়ে উঠছিলেন ল্যাভয়সিয়ের যোগ্য সঙ্গীনি।রসায়ন বিজ্ঞান যখন মধ্যযুগীয় বিচিত্র চিন্তাভাবনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ঠিক সেই সময় ল্যাভয়সিয়ে তার গবেষণার মাধ্যমে রসায়নের এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেন।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
1 উত্তর
1 উত্তর
1 উত্তর
1 উত্তর
1 উত্তর
নির্বিক এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে আপনি আপনার প্রশ্ন করে উত্তর জেনে নিতে পারবেন এবং পাশাপাশি অন্য কারো প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলে তাদের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করতে পারবেন।
...